একুশে পদক পাওয়া কে এই জিয়াউল হক

অতিথি ডেস্ক ।।

একুশে পদক পাওয়া কে এই জিয়াউল হক
সমাজসেবায় এবারের একুশে পদকের জন্য মনোনীত জিয়াউল হক

গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে দেশের ২১ জন বিশিষ্ট নাগরিককে একুশে পদক-২০২৪ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রতিবছর ভাষা আন্দোলন, শিল্পকলা, ভাষা ও সাহিত্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা অবদান রাখেন তাদেরকে এই পদক প্রদান করা হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মঙ্গলবার রাত থেকেই খবর ছড়াতে থাকে যে, মো. জিয়াউল হক একুশে পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন। সকলের মনেই  কৌতুহল কোন প্রকার প্রচারে না থাকা কে এই জিয়াউল হক?

খবর পেয়ে আত্মীয়স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীদের মধ্যে আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে। গতকাল বুধবার সকাল থেকে শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাঁর বাড়িতে ভিড় জমান, অভিনন্দন জানাতে সঙ্গে নিয়ে আসেন ফুলের তোড়া। কিন্তু তিনি বাড়ীতে নেই। জীবিকার তাগিদে তখন দই বিক্রি করতে বেরিয়েছেন ৯০ বছর বয়সী জিয়াউল হক।

সমাজসেবায় এবারের একুশে পদকের জন্য মনোনীত জিয়াউল হক চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার মুসরিভূজা বটতলা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ফেরি করে দই বিক্রি করেন। সেই আয়ে সংসার চালানোর পর উদ্বৃত্ত টাকা দিয়ে বই কিনে তিনি গরিব ছাত্রদের মধ্যে বিলি করেন। গত মঙ্গলবার বিকেলে সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সম্মতিপত্রে জিয়াউল হকের মনোনয়নের বিষয়টি প্রকাশ করা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা তাঁর বাড়িতে তখন শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভিড়। জানা যায়, জিয়াউল হক পাশের গোমস্তাপুর উপজেলা সদর রহনপুর স্টেশন বাজারে দই বিক্রি করতে গেছেন। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, একটি ওষুধের দোকানের সামনে বসে দই বিক্রিতে ব্যস্ত জিয়াউল হক।

এ সময় তিনি বলেন, দই ও ক্ষীর নিয়ে আমি সকাল সাতটায় বের হয়েছি। কেননা চাল কেনা ও বাজার করার টাকা ছিল না।

জিয়াউল হক আবেগতাড়িত হয়ে বলেন, আমি কল্পনা করতে পারিনি যে - এত বড় একটা পদক পাওয়ার জন্য মনোনীত হব। জীবনের শেষ দিকে এসে কাজের স্বীকৃতি পেলাম। এখন মরেও শান্তি পাব। কী যে আনন্দ পেয়েছি, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।